প্রকাশিত: ১৪/০৪/২০১৮ ৭:০১ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:১১ এএম

ওবাইদুল হক চৌধুরী, উখয়া নিউজ ডটকম::
আজ পয়লা বৈশাখ। ১৪২৪ সনকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হয়েছে নতুন বছর ১৪২৫। স্বাগত বাংলা নববর্ষ। জীর্ণ-পুরাতনকে পেছনে ফেলে সম্ভাবনার নতুন বছরে প্রবেশ করেছে বাঙালি জাতি। পয়লা বৈশাখে বর্ণিল উৎসবে মাতবে দেশ।
পুরোনো সব গ্লানি মুছে নতুনের আগমনী বার্তা জানান দিতেই যেন বারে বারে নতুন করে, নতুন রঙে ফিরে আসে বাংলা নববর্ষ। বাংলা নববর্ষ ১৪২৫ বরণ করে নিতে চলছে নানা উৎসবের আয়োজন। এই দিনে সবার প্রত্যাশা নতুন বছরটি হবে সুখ-ছন্দের, প্রতিটি দিন কাটবে আনন্দ- হিল্লোলে।ব উৎসব পালনে আরোপ করা হয়েছে কিছু বিধিনিষেধ।

বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সার্বজনীন উৎসবে। পয়লা বৈশাখের ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে মেতে ওঠে সারাদেশ। গ্রীষ্মের খরতাপ উপেক্ষা করে বাঙালি মিলিত হবে তার সর্বজনীন অসাম্প্রদায়িক উৎসবে। দেশের পথে-ঘাটে, মাঠে-মেলায়, অনুষ্ঠানে থাকবে কোটি মানুষের প্রাণের চাঞ্চল্য, আর উৎসব মুখরতার বিহ্বলতা।

বাংলা নববর্ষে ব্যবসায়ীদের ‘হালখাতা’ রীতি এখনো এদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির আমেজ নিয়ে উৎসবের পরিধির আরো বিস্তার ঘটিয়েছে। কৃষক সমাজ আজও অনুসরণ করছে বাংলা বর্ষপঞ্জি। এককালে কেবল গ্রামাঞ্চলেই পয়লা বৈশাখের উৎসবে মেতে উঠতো মানুষ। নানা অনুষ্ঠান, মেলা আর হালখাতা খোলার মাধ্যমে তখন করানো হতো মিষ্টিমুখ। এখন আধুনিক বাঙালি তাদের বাংলা নববর্ষকে সাজিয়ে তুলছে মাতৃভূমির প্রতিটি আঙিনায় আরো বেশি উজ্জ্বলতায়।

মোগল সম্রাট আকবর (১৫৫৬-১৬০৫) তার রাজসভার জ্যোতিষী আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজীকে একটা সার্বজনীন বর্ষপঞ্জি তৈরির দায়িত্ব প্রদান করেন। তার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সৌরমাসভিত্তিক একটা ফসলি সাল উদ্ভাবন করেন। সম্রাট আকবরের দিল্লির সিংহাসনে আরোহনের দিনকে স্মরণীয় রাখতে ১৫৮৪ সালের ১০ বা ১১ এপ্রিল পয়লা বৈশাখ ধরে সাল গণনা করার রীতি প্রবর্তন করা হয়।

সম্রাট আকবর তার রাজত্বকালে ভারত উপমহাদেশের সর্বত্র এই ফসলি সনের শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে এই ফসলি সনের নামই বাংলা সাল বা বঙ্গাব্দ হয়েছে।

বাংলা সন সবসময়ই কৃষিভিত্তিক। আজও আমাদের কৃষকসমাজ বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করেই হাল চালান, ফসল ফলান। ফসলি সনের সঙ্গে কৃষকের আত্মার সম্পর্ক।

মাঠের শ্রম যখন ফসল হয়ে ঘরের আঙ্গিনায় উঠে, আশা-আকাঙ্ক্ষা-স্বপ্ন পূরণে আশাবাদ জাগে তখন উৎসবের আমেজ পাওয়া যায়। আগে উৎসবগুলো ঘিরে গ্রামে গ্রামে গ্রামীণ সংস্কৃতির যে সকল আসর বসত মেলা তার অন্যতম।

এ সকল উৎসবে আনন্দে মেতে থাকত গ্রামের মানুষ। মেলায় মানুষের ঢল নামত। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে হৈচৈ করে বেড়াত আবাল বৃদ্ধ বণিতা। মেলাকে ঘিরে হস্তশিল্পের নহর বয়ে যেত। কৃষক তার সারাবছরের ঘর-গৃহস্থালির সরঞ্জাম এখান থেকেই সংগ্রহ করতেন।

সেই কৃষ্টি-কালচার-উৎসব গ্রামে হারিয়ে যেতে বসেছে। তার পরিবর্তে শহুরে উৎসবে উৎসাহ বেড়েছে কয়েকগুণ। গ্রামের আনাচে-কানাচে কে আর পৃষ্ঠপোষকতা করতে চায়।

মাটির সানকিতে একদিন পান্তা-ইলিশ খেয়ে গ্রাম-বাংলার সেই সুখস্মৃতি কি কোনোদিন খুঁজে পাওয়া যাবে?
বাংলা নববর্ষ উদযাপনে এখন নানা ধরনের বর্ণিল আয়োজন হতে দেখা যায়। তবে আজও মঙ্গল শোভাযাত্রা রয়েছে এর সর্বাগ্রে।

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...